প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মানির ইতিহাস
November 22, 2022
0
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় জার্মান সাম্রাজ্য একটি কেন্দ্রীয় শক্তি হবার পরেও তারা যুদ্ধে হেরে যায়। তাদের অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি মিত্রবাহিনী সার্বিয়ার সাথে যুদ্ধ ঘোষণার পর পরই এই সংঘাত শুরু হয়। জার্মান সৈন্যরা মিত্রবাহিনীর সাথে পূর্ব এবং পশ্চিম উভয় প্রান্তে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যদিও ১৯১৪ এর অল্পকিছু সময় যখন পূর্ব প্রুশিয়া আক্রমণ হয়, সে সময় ছাড়া যুদ্ধের পুরোটা সময় ব্যাপক আক্রমণ থেকে জার্মান রাজ্যগুলো তুলনামূলক ভাবে নিরাপদেই ছিল। রয়্যাল নৌবাহিনীর আরোপিত একটি পাকা পোক্ত অবরোধের কারণে শহর গুলোতে খাবারের সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে ১৯১৬-১৭ এর শীতে যেটি টুরনিপের শীত নামে পরিচিত। যুদ্ধের শেষে, জার্মানির পরাজয় চরম অসন্তোষ ১৯১৮-১৯ সালের জার্মান বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়, যা রাজতন্ত্রকে উৎখাত করে ওয়েমার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।
সার সংক্ষেপঃ
সম্পাদনাঃ
জার্মান জাতি ১৯১৪ এর সেই যুদ্ধে মিশ্র আবেগের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে, ঠিক যে ভাবে ইউরোপের অন্যদেশ গুলোর জনগণ জানিয়েছিল; সে সময়কার প্রত্যক্ষদর্শী জাতি যারা ১৯১৪ এর মূল চালিকা শক্তি হিসেবে পরিচিত, পরবর্তীতে বহু চ্যলেঞ্জের সম্মুখীন হয়। জার্মান সরকার, জানকার্সের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভেবেছিল এই যুদ্ধ জার্মানির বিরোধ প্রতিযোগী ফ্রান্স, রাশিয়া এবং ব্রিটেনের সাথে দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাবে। যুদ্ধের শুরুটা জার্মানির কাছে এমন ছিল যে তাদের জাতিকে রক্ষার শেষ সুযোগ "সূর্যের নিচে আমাদের জায়গা" যেমনটা তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বার্নহার্ড ভন ব্লো যেমনটা রেখেছিলেন। আর সেটিও জনগণ জাতীয়তাবাদ হিসেবে সমর্থন করার জন্যে তৈরি ছিল। কায়সার এবং জার্মান সংস্থা আশা করেছিল যে যুদ্ধটি জনগণকে রাজতন্ত্রের দিকে উদ্ভুদ্ধ করবে এবং জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নাটকীয় বিকাশের ফলে উদ্ভূত হুমকিকে কমিয়ে দেবে। যারা যুদ্ধের আগে রিকস্ট্যাগ এ কায়সারের সবচেয়ে সোচ্চার সমালোচক ছিল। দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সদস্যপদ থাকা সত্ত্বেও, জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ইম্পেরিয়াল সরকারের সাথে তার মতবিরোধের অবসান ঘটায় এবং যুদ্ধের প্রয়াসকে সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক নীতিগুলি লঙ্ঘন করে।
খুব দ্রুতই প্রতীয়মান হয় যে জার্মানির কয়েক মাসের বেশি যুদ্ধ চালানোর জন্য প্রস্তুতি ছিল না। প্রথমদিকে, যুদ্ধকালীন সময়ে অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি এবং এর ফলে জার্মান যুদ্ধ কালীন সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা ছন্ন ছাড়া অবস্থায় থাকে। জার্মানি খাবার এবং কাঁচামাল আমদানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, সেটিও জার্মানির ব্রিটিশ অবরোধ এর ফলে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। খাদ্যের মূল্য প্রথমে সীমিত রাখা হয় পরে রেশন পদ্ধতি চালু করা হয়। ১৯১৫ এর দিকে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন শূকর গনহারে মারা হয় তথাকথিত শোয়াইনমর্ডে শুধুমাত্র খাবার এবং শস্য সংরক্ষণের নাম করে। ১৯১৬/১৭ এর শীতকে "টুরনিপ শীত" বলা হয় কারণ আলুর ফলন কম ছিল এবং মানুষজন জীব জন্তুর খাবার খেয়েছিল, তার মধ্যে জঘন্য স্বাদের শালগমও ছিল। ১৯১৪ সালের আগস্ট থেকে ১৯১৯ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত যুদ্ধ চলাকালীন, অপুষ্টি ও ক্লান্তি ও রোগ ও হতাশার উচ্চ হারে যুদ্ধ বন্ধ থাকাকালীনও অতিরিক্ত মৃত্যুহার বেড়ে লোক সংখ্যা দাঁড়ায় ৪,৭৪,০০০ জন।
১৯১৪-১৫
সম্পাদনা
মূল নিবন্ধ: পশ্চিম রণাঙ্গন (প্রথম বিশ্বযুদ্ধ)
জার্মান সৈন্য বাহিনী পশ্চিম ফ্রন্টে শ্লিফেন পরিকল্পনার পরিবর্তিত একটি পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে যুদ্ধ শুরু করে, যেটি জার্মান সীমান্তে ফরাসি সেনাবাহিনীকে ঘিরে ফেলার আগে নিরপেক্ষ বেলজিয়ামের মাধ্যমে দ্রুত ফ্রান্সকে আক্রমণ করার জন্য সাজানো হয়েছিল। বেলজিয়ানরা পাল্টা যুদ্ধ প্রতিহত করে এবং নিজেরাই নিজদের রেল চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে রাখে যাতে করে জার্মানদের দেরী হয়। জার্মানরা এটা ঘুণাক্ষরেও আশা করেনি যার ফলে দেরী তাদের হয়েই যায়। আর এর জবাব দেয় জনসাধারণের উপর নিয়মতান্ত্রিক ভাবে প্রতিশোধ নিয়ে। প্রায় ৬,০০০ এর মত সাধারণ মানুষ হত্যা করে তার মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল সেই সাথে ধ্বংস করে প্রায় ২৫,০০০ ঘর বাড়ি।[৪] পরিকল্পনা মতে প্যারিসে একত্রিত করার জন্য জার্মানরা ডান দিকে অগ্রসর হয় আগাতে থাকে এবং প্রাথমিকভাবে, জার্মানরা খুব সফল হয়েছিল, বিশেষ করে সীমান্ত যুদ্ধে (১৪-২৪ আগস্ট)। সেপ্টেম্বরের ১২ তারিখের মধ্যে, ব্রিটিশ বাহিনীর সহায়তায় ফরাসিরা প্রথম যুদ্ধে (৫-১২ সেপ্টেম্বর) প্যারিসের পূর্ব দিকে জার্মান অগ্রগতি থামিয়ে দেয়। এই যুদ্ধের শেষ দিনগুলো পশ্চিমে খন্ড যুদ্ধ সমাপ্তির ইঙ্গিত দেয়। ৭ আগস্ট মুলহাউস যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিতে ফরাসি আক্রমণ সীমিত সাফল্য লাভ করে।
পূর্ব দিকে, শুধুমাত্র এক দল স্থল ভাগের সৈন্য পূর্ব প্রুশিয়াকে রক্ষা করে এবং যখন রাশিয়া এই অঞ্চলে আক্রমণ করে তখন এটি পশ্চিম ফ্রন্টের উদ্দেশ্যে জার্মান বাহিনীকে ঘুরিয়ে দেয়। জার্মানি সম্মিলিতভাবে ট্যানেনবার্গের প্রথম যুদ্ধ (১৭ আগস্ট - ২ সেপ্টেম্বর) নামে পরিচিত একটি ধারাবাহিক যুদ্ধে রাশিয়াকে পরাজিত করে, কিন্তু এই ঘুরিয়ে দেয়া জার্মান জেনারেল স্টাফ দ্বারা অনুমেয় ছিল না ফলে রেল প্রধান থেকে অগ্রিম অপর্যাপ্ত গতি সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। কেন্দ্রীয় শক্তি একটি দ্রুত বিজয় অগ্রায্য করে এবং দুই দিকেই যুদ্ধ করতে বাধ্য করে। জার্মান সেনাবাহিনী ফ্রান্সের অভ্যন্তরে একটি ভাল রক্ষণাত্মক অবস্থানে যেতে তার পথে লড়াই করে যাচ্ছিল এবং স্থায়ীভাবে ২,৩০,০০০ ফরাসি এবং ব্রিটিশ সৈন্য নিজেদের হারানোর চেয়ে বেশি অক্ষম ছিল। এতসব কিছু সত্ত্বেও, যোগাযোগ সমস্যা এবং বিতর্কিত আদেশ এবং সিদ্ধান্তের কারণে জার্মানিকে একটি তাড়াতাড়ি বিজয় পাওয়ার সুযোগ এনে দেয়।
৬৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে জার্মানি যুদ্ধকালীন সময়ে ১.৭ মিলিয়ন সৈন্য হারায় এবং প্রায় ৪,৩০,০০০ জন সাধারণ হতাহত হয় (বিশেষ করে খাদ্য অবরোধের কারণে), একই সাথে আফ্রিকা এবং অন্যান্য বিদেশী উপনিবেশগুলিতে প্রায় ১৭,০০০ জন মারা যায়।[
১৯১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত মিত্র বাহিনী অবরোধ অব্যাহত রাখালে অতিরিক্ত অন্যনা সমস্যার সৃষ্টি হয়।[
Tags
Share to other apps
